ব-ফলা ও য-ফলা ( পথিক )

কয়েকটি স্বস্তা চকোলেট, পাঁচ টাকার ঝালমুড়ি,
আর কমসহযোগীতামূলক ঠান্ডা বাতাস,
পথ এবং পথিকের সেই চিরচেনা গল্পের একটা ছোট খন্ড ।।

নতুন আর পুরানা দিনের সেতু বন্ধন খুঁজতে পথিকের স্বরবর্ণের ব-ফলা আর ব্যঞ্জনবর্ণের য-ফলা …
একীভূত হয়ে একটা বড় বাবুদের গল্প ফাঁদে !

পথের কাছে পথিক অচেনা নয়, কম চেনা ।

পথিকের কাছে পথ সবসময় অচেনা, নতুন , আহ, মায়ারে 🙁

পথা একা না পথিক একা ? যুদ্ধ ?
তৃতীয় পক্ষ বটবৃক্ষ, শান্তি চাই নইলে জাত যাবে তো !

………………।
২৭।০১।২০১৩, মানচুমাহারা

ডায়েরীর পাতাঃ

ডায়েরীর পাতা

আজ আমি ও নষ্টদের দলে

প্রতিদিন ধর্ষণ করে চলেছি আমার বিবেক কে !
আমার প্রভুদের কথায় আমি উঠি বসি,
আজ আমি ও নষ্টদের দলে।

আমি অসুরের মতো বোমা মারি,
আমি জীবন্ত মানুষের লাশ নিয়ে খেলা করি,
আমার প্রভুরা আমাকে বাহবা দেয়,আমার নামের আগে যোগ হয় ‘কসাই’ শব্দটা।

আমি অন্ধকার জগতে অধিষ্ঠিত হই এবং
অন্ধকারকে প্রতিষ্ঠিত করতে যেহাদ করি।

আজ আমি ও নষ্টদের দলে।
আজ আমি সমাজ থেকে বিছিন্ন,
মানুষ আমাকে থুতু দেয়,
আর আমি নতুন উদ্যমে পাপ করি।
আমি অন্ধকারকে আমার পথ হিসাবে আকঁড়ে থাকি।
আজ আমি ও নষ্টদের দলে।

হঠাৎ ঘুম ভেংগে জেগে উঠি,
দুঃস্বপ্নের জন্য কষ্ট পাই,অনুতপ্ত হই।
কিন্তু আমার শরীর অবশ,
আমাকে আমার প্রভুরা সম্মোহিত করে রাখে।
আমার প্রভুরা আমাকে ছুড়ে ফেলে দেয়।
আজ আমি ও নষ্টদের দলে

বৃষ্টিহীন বৃষ্টির নগরে

ঝির ঝির বৃষ্টিতে চমশার কাচে আশ্রয় নিয়েছে অলস বৃষ্টি ফোটা,
মুছতে ইচ্ছা করছে না।
বৃষ্টির কোন ফোটাতে যখন আলো পড়ছে চোখ আস্তে আস্তে ঝাপ্সা হয়ে যাচ্ছে
আর
চলে যাচ্ছি অচেনা কোন নগরে
যেখানে
জেগে থাকি বৃষ্টিহীন বছরের পর বছর।

বন্ধু তোর নগরে যদি বৃষ্টি না হয় আমাকে জানান দিস,
রংয়ের হিসাব ভুলে ধার দিয়ে দেবো আমার চমশার কাঁচে জমা বৃষ্টি্র ফোটাগুলো।।

দেওয়াল

একটা উচু দেওয়ালের সামনে প্রতিদিনই দাঁড়ায় আর
ভাবি এই দেওয়ালটার তৈরি না হলে কি খুব ক্ষতি হতো ?

মাঝে মাঝে ভাবি দেওয়ালটি জবরদস্তি করে ভেঙ্গে ফেলি কিংবা
এতো দূরে পালিয়ে যায় যেখান থেকে আমি চাইলেও এই দেওয়ালের কাছে আসতে পারবো না … হে হে

ধরে নিলাম, আমি দেওয়াল ভেঙ্গে ফেলেছি কিন্তু
এইযে এতো বছর ধরে মনের ভেতর আর এক বিশাল দেওয়াল তৈরি হয়েছি সেটার কি হবে ?

ভাবছো আমি নিরাশাবাদী … হে হে না ঠিক তেমনটি নয়, আমি জানি আমি একদিন এই মনের দেওয়ালও ভেঙে ফেলবো, তারপর ?
দেওয়ালের ওপাশে যা আশা করেছিলাম তা থাকবেতো, নাকি সবই ফাঁকি।।

ভাবছি দেওয়ালের প্রতিপালককে ধমক দিয়ে বলি,
ফাজলামি পাইছো, ইচ্ছা হইলো আর দেওয়াল তুলে মজা দেখো না ?
———————————————————————————-
২৫.০৪.২০১০
উৎসর্গঃ একটি অদৃশ্য দেওয়াল এবং তার প্রতিপালককে

স্বপ্ন

হয়তো চাইলেই গল্প- কবিতার মত
এক ঝাঁক বুনো হাঁসের দলে মিশে যাওয়া যায় না। কিন্তু
স্বপ্ন দেখতে তো কোন দোষ নেই, শুধু লাগে সামান্য টুকু সাহস।

উৎসর্গঃ স্বপ্ন দেখার সামান্য টুকু সাহস যাদের নেই

অস্থিরতা, বিরক্তি আর দিনযাপনের কাব্য

রাস্তার প্রচন্ড জ্যামে বসে থেকে থেকে আমার ভেতর একটা চরম অস্বস্থি জন্ম নেয়,
বিরক্তি আর অসস্থিরতার এক পর্যায়ে আমি ঘুমিয়ে পড়ি।।

চায়ের দোকানে প্রচন্ড ভীড়ে চা দিতে দেরি হলে আমার ভেতর অস্থিরতা তৈরি হয়।
কিছুক্ষন … না একটা নির্দিষ্ট সময় অপেক্ষা করার পর আমি বিরক্তি নিয়ে উঠে যাই।।
চায়ের দোকানী হেঁকে বলেন… বাজান চা খাবেন না ?

কাজের মাঝ খানে, যখন গভীর মনযোগ দিয়ে কাজ করছি, ধুম করে ইলেক্ট্রিসিটি চলে যায়…
ইউপিএসটা মাত্র এক মিনিট ব্যাকআপ দেয়। আমি বিরক্তি প্রকাশ করতে বলে উঠি, “ধ্যাৎ” !

মাঝরাতে যখন আইএসপির লোকজন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন,
আর আমাকে ভোদায় বানিয়ে ইন্টারনেটের লাইনটা অফ হয়ে যায়… আমি গরর ।।

চারিদিকে নিস্তব্ধতা… আমি এক মনে কাজ করে চলি সারা রাত… কিন্তু মাঝে মাঝেই প্রচন্ড
অসস্থি আর অস্থিরতা আমাকে ঘিরে ধরে… ইচ্ছা করে ছুটে বের হয়ে যায় রুম থেকে আর
আহ এক কাপ চা যদি পাওয়া যেত… ঠিক হল লাইফে মাঝ রাতে পলাশীর মোড়ে যেভাবে চা খেতাম 🙁

অপেক্ষা, উপেক্ষা কোনটাই আমার সহ্য হয়না।
আমি একজন ইমোশনাল-ক্রেজি নিজের রাজ্যে ভবঘুরে!
প্রতিদিন একটু অবসর পেলেই আমি আর দুঃখ মিলে রচনা করি দুঃখবিলাস… মু হা হা ।।

=================================
মানচুমাহারা, ১৪ই অক্টোবর, ২০০৯।

আমি পথ চলি

এই পথ চলা ,রাস্তা-ধুলা-বালি-কাঁদা
রিক্সার টুংটাং,বখাটে ছেলের গলা ছেড়ে গান গাওয়া ।
এর মাঝে চলে পিশাচের কৃত্তন আর নষ্টামী ।
এরই মাঝে আমি পথ চলি,
কতগুলো কুকুর আমাকে দেখে ভেংচি কাটলো !!!

ডাস্টবিনের উৎকট গন্ধ আমাকে বিষন্ন করে
ভিখারীর আর্তনাদ আমার মন খারাপ করে দেয়।
আমি ঈশ্বরকে গালি দেই,
আমি ক্লান্ত হই,বিমর্ষ হই।
এরই মাঝে আমি পথ চলি,
কতগুলো কুকুর আমাকে দেখে ভেংচি কাটলো !!!

দেওয়ালে রং হয় ,পোস্টার আবার রং,আবার পোস্টার,
অসুরের পদাঘাতে রক্তাত্ম হয় পথ,আমার প্রিয় পথ।
কালবৈশাখী ঝড় হয় প্রচন্ড শীতে,হিম হয়ে যায় হাড়
অন্যদিকে মানুষ নগ্ন হয়,
অশ্লীল বান্দর গুলো আমার চলের পথে কাটা দেয়,
এরই মাঝে আমি পথ চলি,
কতগুলো কুকুর আমাকে দেখে ভেংচি কাটলো !!!

ছোট ছোট ঈশ্বরের ঈশ্বর

ছোট ছোট ঈশ্বরের ঈশ্বর

হে ঈশ্বর তুমি আমাদের পাঠালে
আমরা তোমাকে ছোট ছোট খন্ড করলাম !
আমরা তোমার শাখাপ্রশাখার
ভেতর আরও ছোট ছোট ঈশ্বর তৈরি করলাম।
এখন তোমার অনেক নাম ,আমাদের দেওয়া নাম
তোমার নামে আমরা ব্যবসা করি,
তোমাকে প্রতিদিন বিক্রি করি এবং
তোমার নামে ছদ্দবেশে জিকির করি।

হে প্রভু ,আমি অনুতপ্ত এবং
আমি এই ছোট ছোট ঈশ্বরদের দলে মিশে আছি।

হে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ঈশ্বর
তোমারা এক হও,
হে ঈশ্বরদের ঈশ্বর তুমি জেগে ওঠো।

মানচুমাহারা
28.03.06 ,Tuesday

স্থির অস্থির গাংচিল

স্থির অস্থির গাংচিল

=======================

সময়ের দীর্ঘপথে আমি স্থির পথিক
আমার দুরন্ত মন ছোট্ট একটা সময়ের বন্ধী।
উলঙ্গ আমি ভবঘুড়ে সারাদিন-প্রতিদিন
ছুটে চলি একই পথে-একই বৃত্তের পরিধিতে।।
স্বপ্ন ছবি মনের রঙে রঙ্গীন করি -আমি এক স্বপ্ন পথিক।
ছায়াঘুমে জড়িয়ে পড়ে বহেম-আমি ছায়া পথ-
ধরে হেঁটে যাই-ছায়া পথিক।।

রংধনুর মায়ায় থেমে যায় আমার অস্থির পথ চলা
ঝোলার ঈশ্বর বাক্স-বন্ধী,আদরের হাসি উদ্বায়ী-
একটু একটু করে ব্যাসার্ধ বাড়ে আমার বৃত্তের ।।

ছোট ছোট নুড়ি করে ধুলার মন চুরি
উড়ে যায় ধোয়াটে আকাশে
হাড়-কাপুনি শীত নগ্ন বাতাসে।।

রুপসী সাদা-বক লুকায় হাসি-সারা গায়ে
মেখে মায়াজাল,
চিকচিকে আলো পিঠে নিয়ে স্তব্ধ মহাকাল।।

স্থির সময়,স্থির পথিক,স্তির গাংচিল ডানা মেলে
স্থির অস্থির বাতাসে।।

…………………………………………

06.11.06
মানচুমাহারা

খন্ডিত সত্ত্বা

আমি প্রতিনিয়ত খন্ডিত হই,
খন্ডিত অংশ গুলো আবার খন্ডিত হয়,তারাও আবার খন্ডিত হয় ।
প্রতিটি খন্ড আমার সত্ত্বাকে বয়ে নিয়ে যায়
ওরা আমার চিন্তা বহন করে,আমার ভাবনা গুলোকে ধারন করে
প্রতিটি খন্ড আমার না মেলানো প্রশ্ন নিয়ে তোমাদের দুয়ারে যায়,
কিছু কিছু আমি আমার কাছে ফিরে আসে !
আমি আমার চিন্তা গুলোকে ফিরে পাই,
ওরা আমাকে আশাবাদী করে তুলে,
আমার আত্মবিশ্বাস দৃঢ় হয়,
কিন্তু কিছু কিছু কালের গর্ভে হারিয়ে যায়!
অনন্ত অসীমের তৃষ্ণায় ওরা ছুটে বেড়ায়,
না পাওয়া প্রশ্নোত্তরের আশায় ওরা ভবঘুরে,
ওরা ভবঘুরে ঈশ্বরের পেছনে ঘুরে বেড়ায়,
আমার ভাবনা চুরি করে ওরা ফেরি করে !!
আমি ওদের আমার ভাবনা গুলোকে ফিরিয়ে দিতে বলি,
ওরা দেয় না,
ওরা ফিরে আসে না,
ওদের ধরতেই ছুটে চলেছে মানচুমাহারা।
…………………………………………………
মানচুমাহারা
১,৮,২০০৬