একজন রিক্রুটার গড় পড়তা একটা রিজিউম দেখার জন্য ৩০ – ৬০ সেকেন্ড সময় দেন। এই ৬০ সেকেন্ড এর ভেতর তিনি সিদ্ধান্ত নেন আরো একবার তিনি রিজিউমটা পড়বেন কিনা। তার মানে আপনার রিজিউম যত ছোট তত দ্রুত পড়া শেষ হবে এবং ২য় বার পড়ার সুযোগ বেশি তৈরি করবে। সিভি এবং রিজিউমের ভেতরও পার্থক্য আছে। আজকে বেশ কিছু পরামর্শ দেওয়ার চেস্টা করব আর সেই সাথে কিভাবে “Fat Free Resume” তৈরি করা যায় তা ধাপে ধাপে লেখার চেস্টা করব।
CV – long, covers your entire career, static
Resume – short, no particular format rule, highly customizable
আমি সাজেশন দেব, রিজিউম পাঠাবেন, সিভি না। চাইলে দুইটা ফাইল বানাতে পারেন, আগে রিজুম, এরপর সিভি এটাচ করুন।
অনেকে বর্তমান ঠিকানা এবং স্থায়ী ঠিকানা লিখেন। যদি একটু চিন্তা করেন আপনাকে হায়ার করার আগে এটা কারো জানা কতখানি জরুরী ? বড় জোর আপনার নামের নিচে বর্তমান ঠিকানা সংক্ষেপে লিখতে পারেন। যেমন
Mr. Xyz Abc
Kataban, Dhaka -1205
যদি দরকার হয়, আপনার কাছ থেকে ডিটেইল জেনে নিবে বা ইন্টারভিউতে প্রশ্ন করবে।
অনেকে শিক্ষাগত যোগ্যতায় SSC, HSC, Hons, Masters (if) সব গুলো ডিটেইলস লিখেন। ডিটেইলস মানে কত সালে পাশ, সিজিপিএ ইত্যাদি ইত্যাদি। আমি সাজেশন দেব, শুধু শেষ দুইটা লিখুন। যদি Hons পর্যন্ত হয় শেষটা ডিটেইলস লিখুন আর তার আগের টা সংক্ষেপে। আপনি কোন স্কুলে বা কলেজে পড়েছেন আইটি চাকরির জবে এটা জানা খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়, দরকার হলে জেনে নিবে।
অনেকে রেফারেন্স লিখেন শেষে প্রায় দুই বা তিন জনের। আমি সাজেশন দিব বড় জোড়, আপনার থিসিস স্যার বা এডভাইজার স্যার এর নাম লিখুন। খুব কম ক্ষেত্রেই এই গুলো যাচাই করা হয়।
অনেকে অন্যকে দিয়ে রিজুম লেখিয়ে নেয় বা অন্যের রিজুম থেকে দেখে দেখে কপি করে, এটা করবেন না। আপনি এর চেয়ে অনেক কঠিন কাজ করতে পারেন, রিজিউম লেখিয়ে নেওয়া শুধুমাত্র অলসতা ছাড়া আর কিছু না, আপনি ফরম্যাট দেখতে পারেন অন্যের থেকে।
ফ্রেসারদের যদি কোন এক্সপেরিয়েন্স না থাকে (থাকার কথা না কিন্তু এরপরেও যারা এক্টিভ তারা ছাত্রজীবনেও টুক টাক পার্ট টাইম জব করেন না ফ্রিল্যান্স করেন, এটা করতে হবেই তা আমি বলছি না) তাহলে স্কিল যত বেশি সহজ এবং পরিস্কার করে লিখুন।
এমন অর্ডারে লিখতে পারেন (সেকশন গুলো)
১। বামে নাম এবং সংক্ষিপ্ত ঠিকানা, ডানে ছবি
২। ৩/৪ লাইন ক্যারিয়ার অব্জেক্টিভ (আপনি সুপারম্যান এই রকম কিছু লিখবেন না)
৩। স্কিল সেট (অনেকে আগেই এডুকেশন লিখেন, আমি সাজেক্ট করব এটা পরে লিখেন)
৪। এক্সপেরিয়েন্স যদি থাকে তাহলে স্কিলের পরে
৫। এখন এডুকেশন
৬। রেফারেন্স দিতে পারেন নাও দিতে পারেন
যদি এক পাতাতে হয় তাহলে ভালো না হলে সর্বোচ্চ দুই পাতা
আপনার একটা ব্যক্তিগত ওয়েব সাইট থাকা ভালো, এক হাজার টাকায় ডোমেইন পাওয়া যায় এক বছরের জন্য। ফ্রি হোস্টিং হিসাবে ওয়ার্ডপ্রেস , গিটহাব ব্যবহার করা যায়। নিজের একটা পোর্টফোলিও সাইট আর সেই সাথে আপনি যা রেগুলার শিখছেন সেই গুলো নিয়ে পরিস্কার বাংলা বা পরিস্কার ইংলিশে রেগুলার লিখুন।
আপনার ব্যক্তিগত ভাবে করা প্রজেক্ট গুলো গিটহাবে শেয়ার করুন। কেউ শুধুমাত্র গিটহাবে আপ্লোড করেই ক্লান্ত বোধ করে কেউ কেউ প্রজেক্ট এর ডেসক্রিপশন লিখে, যেহেতু প্রজেক্ট রান না করে কার্যকারিতা এবং দেখতে কেমন তা বুঝা যায় না তাই পারলে কিছু স্ক্রিনশট দিয়ে রাখুন। ডিজাইন ফোকাসড ক্যারিয়ার হলে ড্রিব্বল, বিহ্যান্স এই ধরনের সাইটে নিজের পোর্টফোলিও তৈরি করুন।
লিঙ্কডইনে নিজের একাউন্ট খুলুন এবং সকল তথ্য পূরন করুন, লিঙ্কডইন প্রোফাইলের লিঙ্ক, গিটহাব বা এই ধরনের সাইট এর লিঙ্ক রিজিউমে অন্তর্ভুক্ত করুন।
বাংলিশ কোথাও কোন প্রফেশনাল কাজে ব্যবহার করবেন না। আমি বলব, আপনি কোথাও ব্যবহার করবেন না।
রিজিউম ইমেইল করবেন পিডিএফ ফরম্যাটে, ফাইলে নিজের নাম দিতে পারেন, ফাইলের নাম সব লোয়ার কেস, নামের ভেতর স্পেস থাকতেই পারে তাই তা আন্ডারস্কোর দিয়ে রিপ্লেস করুন, যেমন xyz_abc.pdf। ব্রাউজার থেকে জিমেইল বা এই ধরনের ইমেইল ক্লায়েন্ট দিয়ে ডাউনলোড না করেই পিডিএফ পড়া যায়।
রিজিউমে লাল, নীল, সবুজ ইত্যাদি রং এর লেখা না দেওয়া উচিৎ।
রিজিউম হচ্ছে আপনার বিজ্ঞাপন, নিজের সহজ এবং সংক্ষিপ্ত প্রকাশ।
আমার সব পরামর্শের সাথে বিজ্ঞজনেরা একমত না হতেও পারেন তবে পরামর্শ গুলো মেনে যদি রিজিউম পরিবর্তন বা নতুন করে লিখেন আশা করি আপনি লাভবান হবেন।
যারা লেখা পড়ার সাথে সাথে আজকেই রিজিউম ফ্যাট ফ্রি করার চেস্টা করবে তারা আগামীকাল যারা করবে তাদের থেকে একদিন এগিয়ে থাকবে।
আমাকে লিঙ্কডইন এবং টুইটারে ফলো করতে পারেন.
Find this article english version in medium and linkedin.
Image credit undraw.co