বোশেখ

ইচ্ছে করে প্রচন্ড বড় দুইটা শিং নিয়ে ক্ষেপা সাঁড়ের মত ছুটে যায় মানুষের জঙ্গলে,
কিংবা কাল বোশেখীর প্রচন্দ ছোবলে শহর গ্রামের সব ময়লা উড়িয়ে নিয়ে ফেলি মঙ্গলে।
অথবা পাগলা চৈতে রোদে পোড়াব অলস দেহের অবশ চিন্তা প্রকৌষ্ঠ ||

বিঃ দ্রঃ আগামী বোশেখে না হয় আরো কিছু লাইন যুক্ত করব।
১৪।০৪।২০১৩

অশ্রুফোটা এবং মাটির কথোপকথন

এক অচেনা অজানা মানুষের চোখ থেকে এক ফোটা অশ্রু গড়িয়ে পড়ল মাটিতে।
মাটি তাকে জিজ্ঞাসা করল, কি হয়েছে তোমার?
অশ্রুফোটাঃ আহা মানুষটার মনে কি কষ্ট , তাই আমি গড়িয়ে পড়লাম !
মাটিঃ তোমার কষ্ট হলে তুমি কি কর ?
অশ্রুফোটাঃ …।

সব কিছু গুনি না, গুনতে নাই

সব কিছু গুনতে নাই, সব কিছু গুনি না।

কতবার হেসেছি, কতবার কেশেছি মনে নাই।
কতবার লাফিয়েছি, কতবার বসে থেকেছি ভ্যাবলার মত মনে নাই।
কতবার দুঃখ দিয়েছি অন্যকে, কতবার নিজে দুঃখ পেয়েছি,
কতবার ভালোবাসা পেয়েছি কিংবা বেসেছি কিংবা প্রত্যাখাত হয়েছি গুনে রাখিনি, আমি গুনে রাখি না।

সব কিছু হিসাব করি কি ? সব হিসেবে থাকে না।
কতবার কীবোর্ডের এন্টার বাটন চেপেছি, কতবার কপি পেস্ট করেছি জানি না।
গোনার চেস্টা করিনি কতবার মাউস দিয়ে ক্লিক করেছি।

আমি কিছুই লিখে রাখিনি কত বার চিন্তা না করেই বলেছি ভালো আছি। কতবার আনমনে বলেছি ধুর !
কত দিন তোমাকে দেখিনি, কতদিন দেখেছি, কতবার দেখবো হিসাবের খাতায় জমা করি না।
আমি হিসাব করতে জানি না, জানি কি, জেনেছি কি ?

কতবার মালায়ন সম্বোধন শুনেছি, কত বার পত্রিকা উল্টাতে পড়েছি মন্দির ভাংচুর লিখে রাখিনি।
কতবার হতাশ হয়েছি, কতবার আশা নিয়ে আবার বেঁচে উঠেছি জানি না। কতবার গালি খেয়েছি, কতবার গালি দিয়েছি জানি না।

হিসাব করিনি অনেক কিছুই, কত কিছু লিখেছি, কি কি লিখি নাই। কি কি বলার কথা ছিল। কি কি বলিনাই আর কত কিছু এখনো বলব।
কত কিছু গুনতে পারিনি তাও গুনে দেখিনি, দেখতে চাই না।

————————–
মানচুমাহারা, ০৯।০৪।২০১৩

দই

দই জমাট বাধার জন্য যথেষ্ট পরিমান ব্যাকটেরিয়ার দরকার হয়।

দই আর ব্যাকটেরিয়ার এই পারস্পারিক সহবাস (সহবস্থান)  একটা সমাধান, এটা কোন সমস্যা না।

 

……………………………………………………………

মানচুমাহারা, ০২।০৪।২০১৩

গন্ধ পাই

একবার হায় ভোল্টেজে আমার বাসার সব বৈদ্যুতিক যন্ত্রের সুইচ পুড়ে গেল,
আমি ঘুমিয়ে ছিলাম, প্রচন্ড পোড়া গন্ধে আমার ঘুম ভেঙে গেল। আমি আজও হঠাৎ হঠাৎ সেই পোড়া গন্ধ পাই।
এরপর আর কখনো আর এমনটি হয়নি কিন্তু মাঝে মাঝেই আমি কল্পনা করি,
আমার ল্যাপ্টপ এর চার্জার গলে যাচ্ছে, ছাদ থেকে বৈদ্যুতিক পাখাটি গলে ছিড়ে পড়ছে ফ্লোরে !

আমি আমার ভেতরের পোড়াকে কখনো পাত্তা দেই না, কারণ ওটা বাইরে থেকে দেখা যায় না,
তাই অত বড় পৃথিবীটা পুড়ে ছাই হলে আমি কোন কবিতা লিখব না, কথা দিচ্ছি।

আমি না চাইনা তবুও উপসনালয় পুড়ে দূরে কোথাও,
মানুষের হাতের কব্জি পুড়ে, বাস পুড়ে, বাড়ি পুড়ে, স্বপ্ন আর ভালোবাসা পুড়ে, বিশ্বাস পুড়ে।
আমি চাই না তবু জানি তোমার এখনো বেঁচে থাকা চোখ একদিন আমাকে দগ্ধ করবে ঠিকই।

তোমাকে পুড়িয়ে আদিম মানুষের মত তোমার চারপাশে আমি হাউলা হাউলা করব না কথা দিচ্ছি,
তবু তুমি পুড়বে কিনা আমি জানি না, আমি তোমাকে বাঁচাতে পারব না যদি তুমি আপনি তাপে পুড়ে যাও।

আমি আগুন আর জলের ব্যবহার জানি না, জ্বালাতে জানি না, জ্বলেছি ঢের বার।
আমি নিরপেক্ষ নই, আমি জলা কিংবা জ্বলার দলের নই, আমি জলিত এবং আমি জ্বালিত।

হয়তো আমি একদিন তোমার পোড়ার জন্য গন্ধ পাব।
………………………………………
মানচুমাহারা, ০২।০৪।২০১৩

বনসাই

প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মকে কাঁচকলা দেখিয়ে কিছু মানুষ গাছের বৃদ্ধি হ্রাসকরণ হরমোন প্রয়োগ করে বনসাই বানিয়ে সৌদর্য খুঁজে।
কেউ কেউ মনের সহজাত অনুভূতি/আবেগকে বনসাই বানিয়েও যুক্তি খুঁজে।

বিঃ দ্রঃ কবিতাটির অপঘাতে মৃত্যু হয়েছে, মৃত্যুকালে তার উচ্চতা হয়েছিল দুই লাইন। কবিতাটির কাছে কারো কোন দেনা পাওনা থাকলে নিজ গুনে ক্ষমা করে দিবেন।

———————
৩০।০৩।২০১৩
মানচুমাহারা

কাতুকুতু

নিশ্বব্দে বোনা জালে ধরা পড়ে মনপাখি
অছ্যুৎ ঘুমে ডুবে আসে নির্লজ্জ দুআখি …

কথা ছিল এদুচোখ আটকাবে ঘোর লাগা চাঁদে,
দিক ভুলে আসা মশা মরবে দুহাতের পাতা ফাঁদে।

কথা ছিল জোনাকীর আলোতে ভুল মনে হবে দুষ্টুমী
কথা ছিল তুমি ঘুমিয়ে পড়লে কাতু কুতু দেব আমি !

কাতু কাতু কাতু কাতু কাতু
ঘুমে ঢুলু ঢুলু চোখ পুতু পুতু ।

——————-
29.03.2013
মানচুমাহারা

বিঃ দ্রঃ লাইনগুলো আমার নিজের ফেসবুকের স্ট্যাটাস থেকে

খিদে (The Holy Hunger)

দুই একটা দিন আমার খুব খিদে লাগে, মনে হয় এক হাঁড়ি ভাত খেয়ে ফেলি,
খিদেটা যত বেশি পেটে তার বেশি কাজ করে মাথায়…
চেতনায় খিদে, বোধে খিদে, চিন্তায় খিদে, দুঃচিন্তায় খিদে –
খিদে ! খিদে !! খিদে !!! আপাদমস্তক শুধু খিদে, মনে হয় যেন
মাউস খেয়ে ফেলি, কিবোর্ড খেয়ে ফেলি, চিবিয়ে তছনছ করে ফেলি টিভির রিমোট ।।

বাম মস্তিষ্কে খিদে, ডান মস্তিষ্কে খিদে। আমি শুধু খাই খাই করি।
আমার খেতে ইচ্ছে করে আমার নিজের চোখ যা দিয়ে আমি স্বপ্ন দেখি,
মাথার ভেতর খাওয়ার ইচ্ছেগুলো হাসফাঁস করে।

আমার খেতে ইচ্ছে করে সকাল, আমি সময়কে খেতে চাই।
সকাল খেয়ে চুরমার করে আমি দুপুর করি। দুপুর খেয়ে আমি ডেকে আনতে চাই গহীন অন্ধকার রাত।

কোন কোন দিন রাত বাড়ার সাথে সাথে খিদে বাড়তে থাকে।
আমি আমার খিদের অনুভূতিকে খেতে চাই, তারপর সেই খাওয়ার অনুভূতিকে খাব।

আমি একটি টিভি চ্যানেল খুলে আমার খাওয়ার ইচ্ছেগুলো প্রচার করব টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া।

আমি দুঃখ খাব,ভালোবাসা খেয়ে বাঁধাব বদহজম !
আমি কলহ খাব, ক্রোধ খাব, খাওয়া আমার অধিকার, আমার স্বাধীনতা।

————————-
মানচুমাহারা, ২৬/০৩/২০১৩
উৎসর্গঃ নিজেকে

ডায়ারীর পাতাঃ
khide

বনমাটি

সেই বনমানুষের কথা মনে আছে ?
সভ্যতার জ্ঞান ছাড়াই যে ফসল ফলিয়েছিল, অজান্তে যে চাষ করেছিল উর্বর মাটিকে।

আজ আমি এক মাটির কথা বলব, তার নাম বনমাটি।
সৃষ্টির শুরু থেকে প্রতিদিন সূর্য ছুঁয়ে যায় বনমাটিকে,
সূর্যের সাথে তার কোন বিশেষ সখ্যতা ছিল তা নয়, না ছিল পানির সঙ্গে !
তবু পানিতে ভিজেছিল বনমাটি অনেকবার ।।

বনমাটি অধির আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করে, একদিন বীরদর্পে বনমানুষ হাজির হবে তার অকৃত্রিম লাঙ্গল নিয়ে,
সূর্যের প্রখর তাপ উপেক্ষা করে বনমানুষ হাজির হবে।

বাতাসের সাথে বনমাটির আজন্ম বন্ধুত্ব।
পৃথিবীর অজানা অচেনা অলিগলি পাড়ি দিয়ে বাতাস বনমাটির বার্তা বয়ে নিয়ে যায় সেই আদিম মানুষের কাছে।

ঠিক কবে তা কেউ জানে না, তবে একদিন বনমাটি আর বনমানুষের দেখা হয়। তাদের নতুন নাম হয় মাটি আর মানুষ।

১৪।০৩।২০১৩
উৎসর্গঃ পৃথিবীর প্রথম বনমাটিকে।
—————————-
বিঃ দ্রঃ এই লেখাটির নাম কেন শুধু বনমাটি হল তা প্রশ্ন করা যাবে না।
বিঃ দ্রঃ২ এই লেখার প্রথম পাঠক বন্ধু সুজিত মনের ভেতর বনমাটির যে অর্থ মজুদ করেছে তা ভুল।
বিঃ দ্রঃ৩ বানান ভুল গুলো নিজ গুনে ক্ষমা করবেন। স্যার হুমায়ুন আহমেদ যদিও তার একটা লেখায় বলেছেন, মানুষ হিসাবে ভুল করার অধিকার আমি রাখি।

মলাট ও মোড়কের গল্প

আজকের এই গল্প বিবর্ণ হবে আগামী কাল, আসবে ফিরে নতুন মোড়কে।
ভালোবাসা ফের বন্ধী হবে নতুন মলাটের গম গম গন্ধে, আহ 🙂

এই উচ্ছ্বাস কিংবা ‘আবারো হাসিমুখ’ শিরোনাম হবে অননুমোদিত উদ্ধত চিৎকারে !

বৃত্ত বন্ধী কিংবা গর্তবাসী নয়, বেঁচে থাকা হোক কেন্দ্র এবং পরিধির দ্বন্দ্ব মুক্ত।

…………………………।
২৫।০১।২০১৩ (ইং), মানচুমাহারা

ডায়েরীর পাতাঃ
মলাট ও মোড়কের গল্প