আজাকে ছিল পয়েলা বৈশাখ ১৪২০, সারা দিন বাসায় শুয়ে বসে কাটিয়ে সন্ধ্যার আগে বের হলাম। হাতে ছিল সান চিপ্স এর প্যাকেট। রাস্তা দিয়ে হাটছি আর চিপ্স এর প্যাকেট থেকে এক একটা চিপ্স বের করে মুখে দিচ্ছি। সন্ধ্যার দিকে সবাই বাড়ি ফিরে যাচ্ছে নববর্ষের ঘুরাঘুরি শেষে। আমি খুব ধীর পায়ে এগুচ্ছি। আমি মাঝে মাঝেই এটা করি। বিশেষ দিনে সন্ধ্যার আগে আগে বের হই রাস্তায়। মানুষ দেখি। হরেক রকমের মানুষ। আমি কাউকে চিনি না, আমাকে কেউ চেনে না। আমার চারপাশে অসংখ বাঁশির প্যা প্যা আওয়াজ। আমার মনে হচ্ছিল সবাই যেন তাদের সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে বাঁশিতে ফু দিচ্ছে, ফু দিয়ে দিয়ে পৃথিবী থেকে বাঁশির শব্দ মঙ্গল গ্রহে পাঠিয়ে দেবে, তারপর ভীন গ্রহ থেকে অচীন প্রজাতির মানুষ এসে আমাদের সাথে নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময় করবে। আরো একটা ব্যাপার আমার খুব অনুভব হয় আর তা হল , আমি হেটে চলেছি আমার দুই পাশ দিয়ে অসংখ্য মানুষ ফিরে যাচ্ছে, মানে চলে যাচ্ছে আমার বিপরীত দিকে। আমার মনে হয় আমি স্থির আছি আর আমার চারপাশের মানুষ সবাই প্রচন্ড গতিতে আমাকে ফেলে ছুটে যাচ্ছে !
হাটতে হাটতে জগন্নাথ হলের মাঠে পৌচ্ছালাম। এই মাঠখানা আমার খুব চেনা। আমি অনেক দিন সন্ধ্যার দিকে এই মাঠে এসে বসে থেকেছি, শুয়েও থেকেছি, এমনকি এক আধা ঘন্টা ঘুমও দিয়েছি। আজকেও বেশ ভালো লাগছিল। আধো আলো, আধো অন্ধকার। এই মাঠটার শেপ বেশ ভালো। আকাশে তাকালে বিশাল আকাশ। আমার মনে হয় বিশাল আকাশ অনুভব করার জন্য বিশাল ফাঁকা মাঠে বসা উচিৎ না। বসতে হবে নিকট ব্যাসার্ধের কোন মাঠে। না হলে মাঠের বিশালতা যদি আপনাকে খেয়ে ফেলে তাহলে আকাশের বিশালতা আপনাকে ছুঁতে পারবে না। এক বনে দুই বাঘকে পাত্তা দেওয়া উচিৎ না। হয় বিশাল আকাশ নয়তো বিশাল মাঠ আপনাকে বেছে নিতে হবে। দুই নৌকায় পা দিলে আপনি আকাশকেও ছুতে পারবেন না, আবার মাঠকেও আপন করতে পারবেন না।
সবাইকে নববর্ষের শুভেচ্ছা।
…।।
১৪।০৪।২০১৩
মানচুমাহারা