করোনার সময়ে সমস্যা এবং চিন্তাঃ রেগুলার টিকাদান কর্মসূচী

করোনার কারণে শিশুদের রেগুলার টিকাদান কর্মসূচীর সাথে যুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ। সরকারি অনেক হাসপাতালে দেওয়া যায় এখনো কিন্তু সেটা সবার জন্য ওয়াকিং ডিসট্যান্স হবে না এবং শিশুকে বেশি দূরে নিয়ে যাওয়া বেশি যুকি পূর্ণ। মিল্ক ভিটা যেভাবে বাসার সামনে দুধ নিয়ে হাজির হচ্ছে, সেই ভাবে টিকাদান এর জন্য ভ্রাম্যমান গাড়ি ব্যবহার করে বাসার সামনে এসে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা জরুরী। অন্তত ঢাকা বা শহরাঞ্চলে। টিকাদান কর্মসূচীর সাথে অনেক গুলো এনজিও জড়িত, তাদের এখনি অলটারনেটিভ কর্মসূচী বা ভ্রাম্যমান কর্মসূচী নেওয়া উচিৎ। পোলিও এবং এই ধরনের টিকা কর্মসূচী বাধাগ্রস্থ হলে এই অঞ্চলে এই রোগ আবার ফিরে আসবে।

করোনা পরবর্তী অর্থনৈতিক চিন্তাঃ -১

করোনা পরবর্তী সময়ে প্রতিটি দেশে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিবে। আমি একাউন্টিং অভিজ্ঞের মত বুঝি না তবে আয় আর ব্যয় বুঝি। যদি আয় বাড়ানো না যায় তাহলে ব্যয় কমিয়ে এটা নিয়ন্ত্রন করা যায়। আবার আয় যদি স্থির থাকে তাহলে ব্যয় কমিয়েও মন্দা কমিয়ে আনা সম্ভব। ব্যয় কমানো মানে যে কম কনজিউম করা তা না। দেশের সাপেক্ষে যদি বাইরে থেকে কিছু কিনি বা আমদানী করি তাহলে সেই ব্যয় আর দেশের ভেতরে কিছু কেনাকাটা আলাদা বিষয়।

প্রতি বছর চিকিৎসার জন্য প্রতিবেশী দেশ ইন্ডিয়াতে অনেক মানুষ যায়। আর যাদের কাঁচাপাকা টাকা আছে তারা আরো উন্নত দেশ বা চিকিৎসা সেবার জন্য অন্য দেশ গুলোতে যায়।

করোনার পরে যদি স্বাস্থ্য খাতে উন্নতি করা যায়, দূর্নীতি কমিয়ে সেবার মান, পরিবেশ উন্নত করা যায় তাহলে বিদেশে চিকিৎসা নিতে যাওয়া কমিয়ে আনা সম্ভব। বৈদেশিক মুদ্রা আয় আর দেশের মুদ্রা বিদেশে না নিয়ে যাওয়া কিন্তু অনেকটা একই রকম ব্যাপার। তো চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যয় কমিয়ে আনা যায় বা বিদেশে চিকিৎসা নিতে যাওয়া বন্ধ করা যায় তাহলে সেটা দেশের অর্থনীতির জন্য সুফল বয়ে আনতে পারে।

এটা করার জন্য প্রথমে দরকার দেশ যারা চালান তারা যদি আগামী ৫ বছর কোন রকম চিকিৎসার জন্য ভিন্ন দেশে না যান এবং সরকারি হাসপাতাল গুলোতে চিকিৎসা নেন। আরো ভালো হয় দেশের সরকারি হাসপাতাল গুলোতে চিকিৎসা নেওয়ার সময় যেন কোন রকম ভিআইপি সুবিধা না নেন। সাধারণ নাগরিক যেভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে টিকেট কেটে চিকিৎসা নেন, সাধারণ নাগরিক যেভাবে জেনারেল ওয়ার্ডে বা বেডে থাকেন সেই ভাবে। প্রতিটি সরকারি হাসপাতাল এবং বেসরকারি হাসপাতাল থেকে ভিআইপি ওয়ার্ড বা বেড সরিয়ে ফেলতে হবে।

বিঃ দ্রঃ ‘করোনা পরবর্তী অর্থনীতি’ হচ্ছে বর্তমান সময়ের হটটপিক

Wrote in facebook here

বড় মোরগ ভাবনা

সংগীত শিল্পীরা যদি ইউটিউবে পুরা আল্বামের ব্দলে একটা একটা করে গান রিলিজ দিতে পারে তাহলে একজন কবি কেন এক লাইন এক লাইন করে বা একজন লেখক কেন এক প্যারা এক প্যারা করে প্রকাশ করতে পারবে না ?

এমনকি একজন সংগীত শিল্পীর একটা গানের প্রকাশনা অনুষ্ঠান পর্যন্ত যদি হতে পারে একজন কবির কবিতার একটা লাইন প্রকাশনা অনুষ্ঠানও হতে পারে। সবাই এসে ঐ এক লাইন নিয়ে আলোচনা করবেন, এক লাইন কবিতা আবৃত্তি শুনবেন।

২০২১ সালের বই মেলা উদ্দেশ্য করে ‘বড় মোরগ’ নামে যে গল্প গ্রন্থ আমি লেখার উদ্যোগ গ্রহন করেছি এটার প্রথম প্যারা লেখা হলেই আমি প্রকাশনা অনুষ্ঠান এর আয়োজন করব। আপনাদের কিন্তু আসতেই হবে।

যখন ইউটিউবে একটা একটা গান রিলিজ হওয়া শুরু হল অনেকে নাক উচু করে এটা নিয়ে কথা বলত, এখন কিন্তু গা শয়ে গেছে। আমার গল্প গ্রন্থের প্যারা প্রকাশনা নিয়েও মানুষ শুরুতে কথা বলবে কিন্তু পরে দেখবেন সবাই এটা ফলো করা শুরু করেছে। একজন কবি ১২ মাসে ১২ লাইন লিখে তার কবিতার ইতি টানবেন, একজন গদ্যকার ১২ মাসে ১২ প্যারা লিখে বই ফাইনাল বান্ডিংয়ে দিবেন।

আমার ভবিষ্যত ‘বড় মোরগ’ গ্রন্থের প্রথম প্যারা লেখা শেষ হলে কারা কারা প্রকাশনা অনুষ্ঠানে অংশ নিতে চান আগে থেকে জানাবেন, আমি ইচ্ছা করেই আসন সংখ্যা সীমিত রাখব। কাছের বন্ধুদের জন্য টিকেট হাফ, দূরের বন্ধুদের জন্য ২০% ডিসকাউন্ট দেওয়া হবে, শত্রু এবং হিংসুটেদের জন্য ১০০% ফ্রি থাকবে।

সবজি, ভালোবাসা এবং সংসার

//সবজি, ভালোবাসা এবং সংসার

একদিন ফুলকপির সিজন শেষ হবে,
আমরা অন্য কোন ফুল দিয়ে ভালোবাসব।
একদিন বাঁধাকপির সময় বিদায় নেবে,
আমরা অন্য কিছু দিয়ে বাঁধব।

এই যে এখন পুরাতন আলুকে পেছনে ফেলে
নতুন চকচকে আলুর ছড়াছড়ি,
আহা, আর দুটো দিন দেরি কর, আমাদের
ছানাপোনা ঘরের মেঝেতে দিবে হামাগুড়ি।

২২ জানুয়ারি, ২০২০

ঢাকা -২০২০ মেয়র ইলেকশনে আমি কেমন মেয়র চাই

ঢাকা দক্ষিন/উত্তরের মেয়র হিসাবে আমি কোণ সময় সুপারহিউম্যান টাইপ কাউকে আশা করি না। আমি খুব স্বাভাবিক একজন মানুষ আশা করি যিনি

১। রাতে ঘুমানোর আগে মশার ভয়তে মশারি টাঙিয়ে ঘুমান
২। সামান্য বৃষ্টি হলে যার বাসার সামনে হাটু সমান পানি জমে
৩। রাস্তার গর্তে হোচট খেয়ে যার বউ/হাজবেন্ড এর পা মচকে যায়
৪। যার ছেলে মেয়ে পার্কের অভাবে বাসার ভেতর খেলে
৫। যিনি বাসার পাশের পার্টি সেন্টার এর নাচ গানের শব্দে মাঝ রাত অবধি ঘুমাতে পারেন না
৬। যিনি সকালে পাবলিক বাসে করে নগর ভবনে যাবেন এবং দিন শেষে পাবলিক বাসে বাসায় ফেরার পথে এলাকার নোংরা কাঁচা বাজার থেকে আলু পটল কিনে ফিরবেন।
৭। যিনি প্রতিবছর বাড়িওয়ালা ভাড়া বাড়ালে হয় মুখ বুঝে এডজাস্ট করেন না হয় কম ভাড়ার বাসায় চলে যান।
৮। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অসংখ্য সাধারণ মানুষের মত অসাধারণ ধৈর্য নিয়ে শহরে বসবাস করে বেচে থাকেন।
৯। ব্লা ব্লা …

ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের অসম বণ্টন(প্রথম আলো)

মিলন (ছদ্মনাম) একটি নিয়োগ পরীক্ষার ভাইবা দিতে গেল। সে নড়াইলের ছেলে। তাঁকে প্রশ্ন করা হলো, তৃতীয় শিল্পবিপ্লবের প্রেক্ষাপটে রাজধানী ঢাকা জেলা থেকে ৬৩তম জেলা নড়াইল কত বছর পিছিয়ে? মিলন কী উত্তর দেবেন?

আসুন আমরা উত্তর খুঁজি।

২.
তৃতীয় শিল্পবিপ্লব ছিল ইন্টারনেট দিয়ে। ইদানীং আমরা চতুর্থ শিল্পবিপ্লব নিয়ে আলোচনা করছি, বিভিন্ন পরীক্ষা এবং ভাইবাতে এখন চতুর্থ শিল্পবিপ্লব হট টপিক! আর একটা খুব সাধারণ কথা আমরা বলি তা হচ্ছে, আমরা আমেরিকা থেকে ১০০ বছর পিছিয়ে। এই ১০০ বছর কিন্তু সম্পূর্ণ বাংলাদেশ পিছিয়ে না। তৃতীয় শিল্পবিপ্লব শুরু ১৯৬৯ সালে। বাংলাদেশে ভিস্যাট দিয়ে ইন্টারনেট ব্যবহার শুরু ১৯৯৬ সালে। তার মানে বাংলাদেশ তৃতীয় শিল্পবিপ্লব বা ইন্টারনেটের সুযোগ থেকে কমবেশি মাত্র ২৭ বছর পেছনে। এখন প্রত্যেকে যার যার জেলা শহরে কত সালে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট এসেছে, হিসাব করুন আর বের করুন আপনার শহর তৃতীয় শিল্পবিপ্লব থেকে কত বছর পিছিয়ে। পেশাদার কাজে মোবাইল ইন্টারনেটকে আমি আলোচনার বাইরে রাখছি। চতুর্থ শিল্পবিপ্লব শুরু হয়ে গেছে কিন্তু ঢাকা, চট্টগ্রামের বাইরে খুব কম জেলা শহরেই ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পৌঁছেছে, ইউনিয়ন বা গ্রাম আরও দূরে। ঢাকা জেলার সবগুলো গ্রামে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট গিয়েছে কি? না, যায়নি। যাঁরা ঢাকার আশপাশে বেড়াতে যান বা সেখানে থাকেন, তাঁরা ব্যাপারটি জানেন।

শুধু ভৌগোলিক অবস্থানের ভিন্নতার কারণে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের লভ্যতার এই তারতম্য খুব বেশি চোখে পড়ার মতো। বাংলা লায়ন এবং কিউবি ওয়াইম্যাক্স ইন্টারনেট সেবা ঢাকার বাইরে বেশ কিছু শহরে নিয়ে গেলেও এখন তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছে প্রায়। অন্যদিকে সরকারিভাবে ইউনিয়ন পর্যন্ত অপটিক্যাল ফাইবার টেনে নেওয়ার প্রকল্প খুবই ধীরগতিতে এগোচ্ছে। প্রোগ্রামিং ছাড়াও অসংখ্য ইন্টারনেটভিত্তিক চাকরির সুযোগ আছে, যা দেশের যেকোনো প্রান্তে বসে যে কেউ করতে পারে। তার জন্য দরকার দ্রুতগতির ইন্টারনেট। আর এই সেবা দেশের প্রতিটি প্রান্তে পৌঁছানো খুবই জরুরি। ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে প্রযুক্তির অসম বণ্টন আমাদের পিছিয়ে দিচ্ছে অনেক বেশি। আগামী দিনগুলোতে প্রযুক্তি পণ্য (সফটওয়্যার) এবং প্রযুক্তিভিত্তিক ভার্চু্যয়াল সেবাই হবে রপ্তানি বাণিজ্যের মূল হাতিয়ার আর তার জন্য দ্রুতগতির ইন্টারনেট গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত দ্রুত পৌঁছানো খুবই জরুরি। আমি নিজে ব্যক্তিগতভাবে মনে করি একটা গ্রামে পাকা রাস্তা আর দ্রুতগতির ইন্টারনেট সমান গুরুত্ব পাওয়া উচিত।

৩.
ইন্টারনেট হচ্ছে এমন একটা মাধ্যম, যা ব্যবহার করে পেশাদার কাজ করার জন্য বড় কারখানা লাগে না বা অনেক লোকবলও লাগে না। একটা কম্পিউটার বা ল্যাপটপ হলেই চলে। কিন্তু আমরা দেখছি ঢাকায় থাকার কারণে একজন যে সুবিধা পাচ্ছেন, গ্রামে বসে আরেকজন সেই একই সুবিধা পাচ্ছেন না। আসলে কিছুই তিনি পাচ্ছেন না। আমরা নিয়োগপ্রত্যাশী মিলনের শহর নড়াইলের কথা বিবেচনা করতে পারি। নড়াইলের আশপাশে গোপালগঞ্জ এবং যশোরে একটি করে প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আছে। মিলনের চার বন্ধু যদি গোপালগঞ্জ বা যশোরের প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করে ইন্টারনেটভিত্তিক কাজ নড়াইলে বসে করতে চান, তাহলে তাঁরা সেটি পারবেন না। কিন্তু মিলনের অন্য চার বন্ধু ঢাকায় এসে বা ঢাকায় থেকে কাজটি করতে পারছেন। তার মানে মিলনের নড়াইলের চার বন্ধু শুধু ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে ঢাকায় আসতে বাধ্য হচ্ছেন। আরও সহজভাবে চিন্তা করলে ঢাকার বাইরে গোপালগঞ্জ বা যশোরের প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করলেও পড়া শেষে সবাই আবার ঢাকায় আসতে বাধ্য হচ্ছে! আমরা গ্রামে ডাক্তার পাঠাতে চাই ‘জোর’ করে, কিন্তু গ্রামে আমরা ইঞ্জিনিয়ার পাঠাতে চাই না কেন?

৪.
মিলন ইন্টারনেট ব্যবহার শিখেছেন ২০০২ সালে, তখন তিনি ইন্টারনেটে যা দেখতেন, তা–ই বিশ্বাস করতেন। দীর্ঘদিন ইন্টারনেট ব্যবহারের কারণে তিনি শিখেছেন এখন ইন্টারনেটে পাওয়া তথ্য অবশ্যই যাচাই করে নেওয়া উচিত। মিলনের শাশুড়ি থাকেন নড়াইল জেলা শহরে, তিনি সম্প্রতি স্মার্টফোন ব্যবহার করা শিখেছেন এবং ইন্টারনেটে (মোবাইল ইন্টারনেটে ফেসবুক) যা দেখেন তা–ই বিশ্বাস করেন। ইন্টারনেট ব্যবহারের পাশাপাশি নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার শিখতে মিলনের প্রায় এক দশক চলে গেছে, মিলন আশাবাদী যে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের এক দশক পার হলে তাঁর শাশুড়িও নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার সম্পর্কে শিখে যাবেন! মিলনের ছোট চাচা থাকেন গ্রামে। তিনি মাঝেমধ্যে মিলনের কাছ থেকে কীভাবে ইন্টারনেটে ফেসবুক চালাবেন, সেই বিষয়ে পরামর্শ নেন। মিলনের চাচাতো ভাই গ্রামে বসে ইউটিউব থেকে ভিডিও টিউটোরিয়াল দেখে ওয়েব ডিজাইন শেখার চেষ্টা করছেন। কিন্তু মোবাইল ইন্টারনেটের অনেক দাম আর দ্রুত মেগাবাইট শেষ হয়ে যায়। মিলন ঢাকাতে দ্রুত গতির আনলিমিটেড ব্রডব্যান্ড ব্যবহার করেন আর তাঁর চাচাতো ভাই প্রতিদিন মেগাবাইট কেনেন! মিলন তাঁর চাচাতো ভাইকে গ্রাম থেকে ঢাকায় আসার জন্য পরামর্শ দিচ্ছেন প্রতিনিয়ত, গ্রামে বসে মোবাইল ইন্টারনেটের এমবি দিয়ে কিছু হবে না।

৫.
একদিন আমাদের পদ্মা সেতু হবে। প্রতিবার নড়াইল থেকে পদ্মা পাড়ি দিয়ে ঢাকায় ফেরার সময় মিলন চিন্তা করেন, সেতুটা শেষ হলেই চার ঘণ্টায় তিনি ঢাকা থেকে নড়াইল যেতে পারবেন। চাকরিটা যদি না হয় আর ২০২০ সালে যদি নড়াইলে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট চালু হয়, তাহলে তিনি নড়াইলে ফিরে যাবেন। সেখানে বসে ইন্টারনেটভিত্তিক ফ্রিল্যান্স কাজ করবেন আর তাঁর স্বপ্নের প্রযুক্তিভিত্তিক প্রতিষ্ঠান নড়াইলেই শুরু করবেন।

মিলন কি পারবে গ্রামের বাড়িতে জানালার পাশে বসে পাখির ডাক শুনতে শুনতে ল্যাপটপ দিয়ে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহার করে ইন্টারনেট মার্কেটিংয়ের কাজ করতে? আর তাঁর চাচা তাঁদের বাড়ির পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় হাঁক দেবে, ‘কি বাবা গ্রামে বসে ভালোই তো ডলার কামাচ্ছ, এবার বিয়েশাদিটা সাইরে ফেলো!’

সবুজ কুন্ডু তথ্যপ্রযুক্তি উদ্যোক্তা, প্রতিষ্ঠাতা কোড বক্সার

বিঃ দ্রঃ লেখাটি প্রথম আলোতে ছাপা হয়েছিল

একদিন যে শর্ট ফিল্মটা আমি বানাবো

সেদিন ইস্টার্ন প্লাজার বাম পাশে নতুন গড়ে ওঠা চা দোকানে চা খাচ্ছি আর মার্কেট এর কাস্টমার বের হওয়া ও প্রবেশ দেখছিলাম, সাথে মার্কেটের সামনে চিরস্থায়ী গাড়ী/বাইকের হর্ণ যুক্ত জ্যাম এনজয় করছিলাম। খেয়াল করলাম এক মহিলা চায়ের দোকান থেকে সামান্য দূরে দাঁড়িয়ে ভিক্ষা করছেন। আমাকে খেয়াল করলেও আমার দিকে আসেননি। মার্কেট এর সামনে যাকে পাচ্ছেন তার কাছে হাত পাতছেন। হঠাৎ খেয়াল করলাম এক বিদেশী (চেহারায় বাংলাদেশ এর পাহাড় অঞ্চল কিংবা থাইল্যান্ড/মিয়ানমার এর নাগরিক মনে হচ্ছিল) সাথে এক বাংলাদেশী গাইড বা সঙ্গী।

ভিক্ষুক মহিলা ঐ বিদেশীর কাছে হাত পাতলে সে(বিদেশী) তার সাথে থাকা বাংলাদেশী ব্যক্তিকে ইশারা দিয়ে ঐ মহিলা কি বলে শোনার জন্য ইঙ্গিত দিল। দূর থেকে যা বুঝলাম বাংলাদেশী লোকটা হাতের ইশারা দিয়ে মহিলাকে চলে যেতে বলব !

এবার ভিক্ষুক মহিলা চায়ের দোকানের সামনে(দোকানে পাশে আমি দাঁড়ানো এক মাত্র লাইভ ক্রেতা হিসাবে যে এখনো কাঁচের কাপ থেকে চুক চুক করে চা খাচ্ছে আর সামনের ঘটনা পর্যবেক্ষন করছে ) এসে চায়েক দোকানদার ছোকরাকে বলব, দেখলি, শালা বাঙালী … (বেশ খারাপ গালি) আমাকে ভিক্ষা দিতে দিল না, বিদেশী কিন্তু আমাকে দিতে চাইছিল। … মহিলা আর এক প্রস্থ একই কায়দায় কিছু বলার পর চায়ের দোকানের ছেলেটার দিকে হাত পাতলে ছেলেটা বাঙালীর ইজ্জত বাজাতে দুটাকা তাঁর হাতে দিল। আমার দিকেও মহিলা হাত বাড়িয়ে ভিক্ষার জন্য ইশারা(আবেদন) করল। আমি অভ্যস্থ বাঙালীর মত মাথা ঝাকিয়ে না বোধক উত্তর দিয়ে চায়ের কাপ শেষ করার দিকে মনযোগ দিলাম। মহিলাম অবশ্য আমাকে নিয়ে কোন কটুক্তি না করে ভিক্ষার কাজে মনযোগ দিলেন।

আমার শর্টফিল্মের কাহিনী এই টুকুই। এটা আমি বানাবো ৫ মিনিট এর কাহিনী হিসাবে তবে শর্ট ফিল্মের দৈর্ঘ্য এত ছোট বা ৫ মিনিট হবে না। এটার কাহিনী প্রথমে আমি যা লিখেছি তা দেখানো হবে, এরপর আবার শুরুতে আসবে, এবার কাহিনী দেখানো হবে চাওয়ালা ছোকরার চোখ দিয়ে মানে সে বাড়িয়ে গিয়ে তার কচি বউ বা বাড়ির অন্যদের কাছে ঘটনা কিভাবে বর্ণনা করছে… এভাবে আবার ৫ মিনিট, এরপর ভিক্ষুক মহিলা, সেই হাইব্রিড বিদেশী, সেই বাংলাদেশী/বাঙালী, এবং আশেপাশের অন্য কোণ ব্যক্তিবর্গ যাকে আমি খেয়াল করিনি কিন্তু সে এই ঘটনা খেয়াল করেছে।

যদি শর্ট ফিল্ম বানাতে টাকার ঘাটতি পরে আর আপনাদের কাছে হাত পাতি আপনারা বাঙালীর ইজ্জত রাইখেন কিন্তু !

একটা ব্যাপার খেয়াল করলাম যে, আপনারা বাংলাদেশী আর বাঙালী জাতিয়তা যা নিয়েই লাফ বা ফাল দেন না কেন প্রসংশা বা গালি বা সমালোচনার করার সময় সবাই ‘বাঙালী’ তুলে কথা কয়।

ও হর্ণওয়ালা, তুমি আর একটু ভেপু বাজাও

হে তরুন ভালোবেসে
তোমাকে দিলাম একখন্ড গালি,
এলাকার সেরা বাছাই করা খিস্তি বুলি।

তোমাকে আরো দেব একটা ভেপু বা হরেন বা হর্ণ বা
বা … তোমার মটর বাইকে তোমার আঙুলের কাছে সেই চিরচেনা বাটন বা … তোমার প্রাইভেট কারের ড্যাশবোর্ডে বসানো যেই সুচারু বাটন …
যা তুমি টিপবে, তুমি টিপবে। তোমার সারা জীবনের যত স্ট্রেস তুমি ঐ বাটনে চেপে চেপে ঢাকার রাস্তায় উগ্রে দিবে।

তুমি … তুমি টিপবে, তুমি টিপবে, তুমি হরেনের বাটন চেপে চেপে আমার কান ফাটাবে।

হে তরুন, হে অচেনা বাইকার, হে অমুক ডেরাইভার
তোমাকে ভালোবেসে আমি দেব খন্ড খন্ড গালি।

তুমি … তুমি টিপবে, তুমি টিপবে, তুমি হরেনের বাটন চেপে চেপে আমার কান ফাটাবে।

তোমার গুষ্টির সবার সুখ শান্তির জন্য দৈব চয়নে বাছাই করে
আমি ঢাকার রাস্তার কোন এক চৌরাস্তার মোরে প্রার্থনা পূজায় বসব।
ঈশ্বরকে স্বাক্ষী রেখে আমি তোমাকে উদ্দেশ্য করে মনে মনে আওড়াবো বাছাই করা খিস্তি বুলি। আমার সামনে পেছনে তোমাদের ভীড় লেগে যাবে, তোমরা হর্ণ বাজিয়ে বাজিয়ে বাজিয়ে উলুধ্বনি দিবে।

হে তরুন ভালোবেসে
তোমাকে দিলাম একখন্ড গালি,
এলাকার সেরা বাছাই করা খিস্তি বুলি।

হে তরুন, হে অচেনা ডেরাইভার তোমার পশ্চাৎদ্বেশে হর্ণ বাজাও
হর্ণ বাজিয়ে বাজিয়ে আমার কানের পর্দা ফাটিয়ে দাও।

[নোটঃ জানেন ভাবি অমুক তারিখে ফেসবুকে আমার এই কবিতাটা গেছিল।]

হইচই

প্রিয়তমা,

এই সুন্দর পরিবেশে এসো আমরা দুদন্ড হইচই করি।

তুমি এক মুঠো কাঁদা আমায় ছিটিয়ে দাও, আমিও এক মুঠো তোমার গায়ে।

এরপর এই কাঁদাকাঁদির সুন্দর পরিবেশে এসো আমরা আলিঙ্গন করি, হইচই করি।

প্রিয়তমা,

তোমাকে এই সুন্দর পরিবেশে যে কোন মূল্যে হইচই করতে হবে। সুন্দর দিনের শেষে তুমি আমার গায়ে পানি ঢেলে দাও, আমিও তোমার গায়ে … পানি ঢেলে দেই…ই ?

প্রিয়তমা,

দিন শেষে রাতের সুন্দর পরিবেশেও তোমাকে হইচই করত হবে। ডিসি না মার্ভেল এর মুভি দেখব এটা নিয়ে আমাদের ভেতর তুমুল হইচই হবে।

প্রিয়তমা,

গভীর রাতের সুন্দর পরিবেশে আমরা হইচই করতে করতে একে উপরের গায়ে এলিয়ে পড়ব।

আমরা তুমুল হইচই করব।
আমরা তুমুল হইচই করব।
আমরা তুমুল হইচই করব।

//২৮/০৮/২০১৯

ফাঁসীর রায়ের নথি হারিয়ে গেছে!

ছোট গল্পঃ

এক উদভ্রান্ত প্রেমিক রাগের মাথায় জনসমক্ষে তার প্রেমিকাকে খুন করে ফেলল। তারপর অনুতপ্ত হয়ে নিজেই নিজের নামে থানায় গিয়ে মামলা করে দিল। দীর্ঘ বিচার এর সময় প্রেমিক প্রচন্ড অন্তর্জালায় জর্জরিত হল।

দীর্ঘ অপেক্ষার পর এক দিন আদালত তার ফাঁসীর রায় দিল। ফাঁসী কার্যকর করার দিন শোনা গেল ফাঁসীর রায়ের নথি হারিয়ে গেছে!