শুন্যতা

কতজন মানুষ মহাশুন্যে গিয়েছে ?
একটি তারা খসে গেলে কিংবা একটি আলো নিভে গেলে বড়জোড় নাসার একজন বিজ্ঞানী আহত হবেন।

যদি একজন পরিচিত মানুষ অনুপস্থিত থাকে,
একজন বন্ধু কিংবা ভালোবাসার মানুষ, ঘুরে ফিরে সেই শুন্য জায়গা চোখে পড়ে, মনে পড়ে।

মানুষকি শুন্যতাকে অস্বীকার করতে চায় ?
শুন্য আর শুন্যতার পার্থক্য কি মানুষ জানে ?
বৃত্তের কেন্দ্র আর পরিধির দুরত্ব কি মানুষ জানে ?
পরিধিতে দাঁড়িয়ে কি মানুষ কেন্দ্রের শুন্যতা অনুভব করে না ? কিংবা কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে কি মানুষ পরিধিকে আঁকড়ে ধরতে চায় না ?

মহাশুন্য আর মহাশুন্যতা এক জিনিস নয়।
মানুষ কি মহাশুন্যতা অনুভব করতে পারে?

প্রশ্ন আর উত্তরের মাঝেও কিছু শুন্যতা এবং অপূর্ণতা আছে।

শুন্যতার অস্থিত্ব আছে বলেই মানুষ বেঁচে থাকে,
মানুষ বেঁচে থাকে ভরাট এবং জমাট ভালোবাসার জন্য।

……………………………।।
মানচুমাহারা, ১৫।০৫।২০১৩
লালবাগ, ঢাকা।

ইরেজার

পেন্সিলের আঁকিবুকি মোছা সহজ
কিন্তু সাথে কাগজের গায়ে যে আঁচড় লাগে তার কি হবে ?

আরো একটু কাছে গিয়ে দেখলে বোঝা যায় আহা রাবারের ঘষায় কাগজের যে ক্ষয় হয়ে গেল,
বড্ড ক্ষতি হয়ে গেল !

………………………………
মানচুমাহারা, ১৬।০৫।২০১৩, লালবাগ, ঢাকা।

মানচুমাহারার দিনকাল

ঘুম বেশি কমালে একটা সমস্যা হয়, স্মৃতি বিভ্রাট, আমার অনেক ঘুম খুব কম হয় এবং সাম্প্রতিক অনেক কিছু মনে রাখতে পারছি না, যদিও আমার গুরুত্বপূর্ণ না হলে বা আবার জেনে নেওয়ার সুযোগ থাকলে ভুলে যাওয়ার বা মনে না রাখার একটা প্রবানতা মাস্তিষ্ক নিজে বেছে নিয়েছে ! মানুষের আসলে ৮-৯ ঘন্টা ঘুম দরকার অথবা রেস্ট(অন্তত চোখ বন্ধ করে বসে থাকা বা শুয়ে থাকা)

আর একটা সমস্যা হচ্ছে মাল্টিটাস্কিং , প্রায় খেয়াল করি অফিসে যা নিয়ে সকাল কাজ শুরু করি সেটা মাঝ খানে আর সারা দিন ধরা হয় না , দিন শেষ হবার আগে রিক্যাপ করতে গিয়ে টের পাই যে টার্গেটেই ঢুকতেই পারিনি।

মাঝে মাঝে আমার পাশে বসে কেউ কিছু বললে আমি খেয়াল করি না। মাঝে মাঝে অনেক দূরের আস্তে কথা শুনে ফেলি !(সাধু সাবধান)

অচ্ছ্যুৎ

অচ্ছ্যুৎ এর দল চিরকাল সংখ্যাগুরু ছিল।

আকাশ মেঘকে ছুঁতে চায় না, মেঘ বৃষ্টিকে
সূর্যের আলো ছাড়া বাঁচা দায় কিন্তু প্রখর সূর্যকে ছোঁয়ার সাহস কেউ দেখায় না কিংবা ছুঁতে চায় না।
বৃষ্টির জন্য মানুষের সেকি প্রত্যাশা কিন্তু ঝড়কে মেনে নেয় কজনা।

অচ্ছ্যুৎ বলে ঝড়কে কেউ ঘেষতে চায় না, মেঝ দেখলেই পালিয়ে যায় !

সূর্য অচ্ছ্যুৎ,
মেঘ অচ্ছ্যুৎ,
বৃষ্টি অচ্ছ্যুৎ,
ঝড় অচ্ছ্যুৎ।

বোহেম অচ্ছ্যুৎ।

পথিক কিংবা তার পায়ে চলা পথ অচ্ছ্যুৎ।
আমি তোমাকে ছুই না, তুমি আমাকে ছোও না এবং আমরা একে অপরকে ছুই না, আমরা অচ্ছ্যুৎ।

মায়া অচ্ছ্যুৎ, ভালোবাসা অচ্ছ্যুৎ, ভুল অচ্ছ্যুৎ, শুদ্ধ অচ্ছ্যুৎ, মৃত্যু অচ্ছ্যুৎ ।

অচ্ছ্যুৎ এর দল চিরকাল সংখ্যাগুরু ছিল।
——————————–
মানচুমাহারা, ১৪।০৫।২০১৩
লালবাগ, ঢাকা, বাংলাদেশ

লাগাম

গ্রীক দেবী এথিনা ঘোড়াকে পোষ মানিয়েছিলেন।
আমি মানুষ, দেব বা দেবী নই।
মনের ঘোড়ালে লাগাম পড়ানো আমার কম্ম নয় !

আমি ঘোড়ার পিঠে চড়ব কিন্তু ঘোড়ার নিয়ন্ত্রক আমি হব না।
ঘোড়া তাঁর যেখানে ইচ্ছা আমাকে নিয়ে যাবে।

আমি লাগামহীন ঘোড়া চড়ব কিংবা ঘোড়া চড়বে আমাকে।।

……………………………
মানচুমাহারা, ২২/০৪/২০১৩

আত্মপোলব্ধি

বিশুদ্ধ হতে চেয়ে পারিনি, মানুষকি বিশুদ্ধ হতে পারে ?
শুষ্ক হতে চেয়ে হেরে গেছি বার বার, ভিজে গেছি অনাহূত বর্ষায় !
ভিজতে চেয়ে পারিনি, একটা প্রচন্ড শান্ত মরুভূমি গ্রাস করেছে বার বার।

অশুদ্ধতার জন্য কত চেস্টা করলাম !
বিন্দু আর বৃত্তের মাঝে আমার যেন হাজার বছরের আটকে থাকা।

আমি শুদ্ধ হতে চাই,
আমি অশুদ্ধ হতে চাই,
আমি শুষ্ক হতে চাই
আমি চাই আর্দ্রতা।

আমি চিরকাল আমার নিজের কাছে পরাজিত।
আমি পরাজিত হতে চাই,
আমি জিততে চাই,
আমি হারাতে এবং হারতে চাই।

বিরামহীন ভাবে নিজেকে জানার চেস্টা।।

………………………………
মানচুমাহারা, ০৭।০৫।২০১৩

সহজ

সহজেরে খুঁজি,
সহজকে পূঁজি।
নয়তো সহজ নয়তো সোজা,
সহজ মানুষ সহজে বুঝা ।।

একটি সহজ কেন্দ্র চাই, একটি সহজ বৃত্ত
একটি সহজ মন্ত্র চাই, একটি সহজ চিত্ত।

সহজ বলেই সহজ খুঁজি, মেলেনাতো সহজে
সহজ পদ্য, সহজ গদ্য, সহজ ভাবে লহ যে !
…………………………
মানচুমাহারা, ০৯।০৫।২০১৩

প্রতীক্ষা কিংবা চাঁদের জন্য অপেক্ষা

ঘোর অমাবস্যার কাল পেরিয়ে পূর্ণিমার জন্য মানুষের অনন্ত প্রতীক্ষা,
মানুষ অপেক্ষা করতে ভালোবাসে।(?)
ছোটবেলায় স্থির আমি প্রচন্ড আগ্রহ নিয়ে চাঁদের দিকে তাকিয়ে থাকতাম।
অনেকবার মাকে জিজ্ঞাসা করেছি, আচ্ছা মা চাঁদ মামা কেন আমার পিছে পিছে ঘুরে ?

আমার পিছে পিছে ঘুরা চাঁদ মামা আজ স্থির, আমিই অস্থির ভাবে চাঁদের জন্য অপেক্ষা করি সারাটা অমাবস্যা।
অপেক্ষা করতে আমার বিরক্তি লাগে না, নিয়মটাই যেন এমন যে শুধু আমিই অপেক্ষা করব, আর কেউ নয় !

এই এত্তবড় চাঁদের জন্য অপেক্ষা না করে পারা যায়।

পৃথিবীতে যুগে যুগে অনেক চন্দ্রগ্রস্থ মানুষের হাহাকার করেছে…
আমি চন্দ্রগ্রস্থ নই, চাঁদের প্রতি আমার কোন আসক্তি নেই।
আমি সম্ভবত চাঁদের থেকে চাঁদের আলো ভালোবাসি।

আচ্ছা পৃথিবীর কি দুইটা চাঁদ হলে খুব ক্ষতি হত ?
যদি আমার উপর দুই চাঁদের নামকরণের দায়িত্ব দেওয়া হত আমি কি নাম দিতাম ?
কি নাম দিতাম জানি না, তবে আমি ঘোষনা দিয়ে দিতাম আজকে থেকে অমাবস্যা বন্ধ !

…………………………………………………………।।
মানচুমাহারা, ২৮।০৪।২০১৩

মেঘানুভূতি

ঘনকালো মেঘের ছড়াছড়ি আকাশ জুড়ে,
অতল-গভীর-জমাট-উত্কন্ঠা নিয়ে-
প্রচন্ড বেগে ছুটে আসতে চায় মাটিতে।।
ভিজিয়ে দিতে পথ-ঘাট, কষ্টের ঝর্ণা ধারায়……

বোকা আকাশের মন খারাপে মেঘের মাতামাতি
ভারী কষ্টগুলো ঝরে পরে বর্ষা হয়ে,
ভিজে যাই আমি-তুই-আমরা।।

আমার মনেও মেঘ জমে, জমে জমে মেঘগুলো ভারী হয়।।
আমি তো বর্ষা আনি না,
আমি তো তোকে ভেজাতে পারি না।।

আমি নিঃশ্বাস বন্ধ করে মেঘগুলো খেয়ে ফেলি।।
দুঃখগুলো প্রচন্ড উষ্ণতায় উদ্বায়ী হয়ে উড়ে যায়।।

বন্ধু তোর মেঘগুলো জমে ভারী হলে আমাকে দিস।।

হয়তো একদিন নিজেই মেঘ হয়ে যাব,
তোমাদের সব মেঘ চুরি করে আমি হব মেঘরাজ।।

হয়তো প্রচন্ড মেঘলা এক দিনে হয়ে যাব মেঘানুভূতি শূণ্য,
মেঘ প্রতিবন্ধী।।
………………………………………………
মানচুমাহারা

//২০১০ এর দিকে লেখা মনে হয়

অংক

একদিন চুপচাপ বসেছিলাম,
একটা অংক কষেছিলাম,
যোগ ভাগ বিয়োগ …
ভগ্নাংশ, অনুপাত-সমানুপাত
তারপর আমি কাত !