কোলে চড়া, ঘাড়ে চড়া, মাথায় চড়ার সাথে নার্ভে চড়ার একটা বিরাট পার্থক্য আছে। নার্ভে ফিজিক্যালি চড়া যায় না। চড়ার অনুভূতি দেওয়া যায় কাউকে, কেউ চড়েছে সেইটা অন্য কেউ অনুভব করতে পারে। আমার কাছে নার্ভে চড়ার বিষয়টা সম্পূর্ণ হয় যখন যার নার্ভে চড়া হয় সে যদি রিএক্ট না করে হজম করে ফেলে।
গত সপ্তাহে একটা কাপড়ের দোকানে গিয়েছি প্রায় বাজার বন্ধ হবার শেষের দিকে। সাধারনত পরিচিত যে দোকান থেকে কেনাকাটা করি তারা বন্ধ করে দিয়েছে, আসলে বেশির ভাগ কাপড় এর দোকানই তখন বন্ধ। একটা দোকান খোলা পেয়ে গেলাম যেটা অনেক আগের চেনা কিন্তু অনেক দিন যাই না। কিছু কাপড় দেখালো, আমার পছন্দ হল না। বাজেট, বয়স এবং রং এর ধরন উল্লেখ করে পরিস্কার করে বলেছি। সাথে খুব কাছের বন্ধু ছিল একজন। দোকানদার ৪/৫ টি শাড়ি দেখালো। আমি বল্লাম, আমার পছন্দ হচ্ছে না। উনি বল্লেন, অত শাড়ি দেখায়ে উনি বেচেন না। নিলে নেন না হলে ব্লা ব্লা…।
আমার বন্ধু আমার দিকে তাকাচ্ছে, আমি তার দিকে তাকাচ্ছি। আমার একটা শাড়ি কেনা খুব দরকার ছিল, সকালে কিনলে হবে না। ঐ ৪/৫টা থেকে বেটার যেটা আমি চয়েজ করে নিলাম। আমার চিন্তা ভাবনার অংশ এটা। যখন সব খারাপ হয় আমি কম খারাপকে বেজে নেই।
দোকানদার তখন আমার নার্ভে চড়ে বসে পিঠে চাবুক মারতেছে! আমি দিব্যি হজম করে ফেললাম।
আমি এই রকম অনেক মানুষকে আমার নার্ভে চড়তে দিছি। এরা দিব্যি আমারে চাবুক মারতে থাকে। এরা যখন নার্ভ থেকে নামতে চাইবে আমি নামতে দেব না। ধরেন ঘোড়ায় চড়ছেন, আনন্দ করছেন, ঘোড়াকে চাবুক মারছেন, হাই হুই করে তাড়াইছেন, চড়তে চড়তে ক্লান্ত হয়ে গেছেন কিন্তু যখন নামতে চাইছেন তখন আর ঘোড়া থামতেছে না। থামতেছে না তো থামছেই না। আপনি কি করবেন তখন?
নার্ভে চড়বেন না। কোলে চড়েন, ঘাড়ে উঠেন, পিঠে উঠেন, মাথায় উঠেন, নার্ভে চড়বেন না।
আমি ঐ শাড়ির দোকানদার(নড়াইলের) এর জন্য আশবীর্বাদ, দোয়া সব কিছু করি সে যেন সারাজীবন সফলতার সাথে ৩/৪টা শাড়ি দেখায়েই বেচার কৃতিত্ত্ব ধরে রাখতে পারেন, কোন সময় যেন তাকে কাস্টমার এর জন্য সারাদিন বসে থাকা না লাগে।
পরিশেষে, কেউ কারো নার্ভে চড়বেন না।
————————————————————————
দেখেন আপনাদের যা ভালো মনে হয়-২৮