বুয়েটে পড়তে যাবার আগের পর্যন্ত আমার ভেতর তেমন কোন অস্থিরতা ছিল না। নিউ টেনে উঠার পর আমার মা জননীর মাথা গোলমাল হয়ে গেল। যে কোন কারনে তার চিকিৎস্যা শুরু হতে সময় লেগেছিল। আমি নিউ টেনে থেকে শুরু করে এসএসসি পর্যন্ত অনেক দিন আমি বাড়ির পাশে মাঠে বসে পড়েছি। আমার অস্থির লাগত না। ঐ সময় আমি প্রায় মাঠে বসে পড়েছি এটা ক্রেডিট নেওয়ার জন্য লিখছি না বা এজন্য আমি কাউকে অভিযোগ করি না।
ইউনিভার্সিটিতে আসার পর থেকে আমার ভেতর একটা অস্থিরতা কাজ করা শুরু করে। আমি ফোকাস করতে পারতাম না। ফোকাসড হতে আমার অনেক সময় লেগেছে যদিও রেগুলার পড়ালেখার প্রতি আমার তেমন কোন আগ্রহ কাজ করত না।
এন্ট্রাপ্রানার লাইফেও আমার অস্থিরতা আরো বাড়ে। যে কোন বিষয়ে আমার ফোকাসড হতে বা ফোকাস ধরে রাখতে আমাকে অনেক পরিশ্রম করতে হয়। আমি অনেকটা সার্কুলার ভাবে ফোকাস হারায় ফেলি এরপর আবার ফিরে আসি কিন্তু ডেলিভারি করি না। ডেলিভারির আগে আগে আমি আবার অন্য দিকে ফোকাস করি। নাটক সিনেমাতে বাচ্চা ডেলিভারির আগ মূহুর্তে যেমন পাশে দাঁড়িয়ে ডাক্তার, নার্স বা মিডওয়াইফরা ‘পুশ পুশ’ বলে আমি আমার জীবনে এই পুশ বলা লোকের অভাব থেকে বের হতে পারিনি। দিন শেষে আমি আবার নিজের উপর ভরসা করি এবং আবার ফোকাসে ফেরার চেস্টা করি। আমার জন্য ফোকাস হারানোটাই ফোকাসড কাজ হয়ে দাড়িয়েছে।
এই লেখা কেন লিখলাম। এর একটা উদ্দেশ্য আছে। আমার এখন বয়স ৪০+ কিন্তু লেখাটা তাদের জন্য বেশি কাজে দিবে যারা আমার থেকে কম বয়স পার করছে কিন্তু অস্থিরতায় আছে। ব্যক্তিগত ভাবে আমি এখনো অস্থির। আমাকে দেখে মনে হবে ডেড কুল কিন্তু ইটস রং। আমি সব সময় রং ইম্প্রেশন দেই। আমার নিজের ফাইন্ডিং হচ্ছে, ইউনিভার্সিটির আগে পর্যন্ত আমি নিজে নিজে ম্যানেজ করতে পারতাম বা তখনো এমন কিছু আমাকে ফেস করতে হয়নি যা আমার মানসিক প্রেসার নেওয়ার ক্ষমতাকে হারাতে পারেনি। পরের দিকে আমি বেন্ড হয়ে গেছি বার বার। বেন্ড থেকে সোজা হতে আমার সময় লেগেছে।
আমার দূর্বল জায়গা হচ্ছে, আমি সম্ভবত ‘পুশ পুশ’ এর জন্য অপেক্ষা করতাম কিন্তু আমাকে দিন শেষে ‘সেলফ পুশ’ এ ফিরতে হত, হয়েছে এবং হচ্ছে। প্রতিটি ব্যক্তির জন্য তার নিজের দূর্বলতা এবং সামর্থের জায়গা বুঝতে পারা খুব জরুরী। তবে শুরু ‘পুশ পুশ’ বা ‘শুধু সেলফ পুশ’ দিয়ে কাজ হয় না। এর সাথে ‘পুল পুল’ লাগে। পুশ, সেলফ পুশ এবং পুল এই তিনটার সমন্বয় জরুরী। সবার জন্য র্যান্ডম এরেঞ্জমেন্ট বা ভাগ্য একই রকম হয় না। আমার সম্পূর্ণ চিন্তা নিয়ে আমি অনেক বছর আগে একটা ব্লগ পোস্ট লিখেছিলাম যার জন্য নিজে কিছু ছবি এঁকেছিলাম সেগুলো এখানে যুক্ত করে দিলাম।