সারা দিন কাজের স্ট্রেস এর কারণে কতবার রেগে গিয়ে রাগ প্রকাশ করলাম আর কতবার করলাম না সেই হিসাব নিয়ে বাসায় ফিরতে ফিরতে খেয়াল করলাম বাসার কাছেই স্বপ্ন চেইন শপ নতুন শাখা খুলেছে। বাসার পাশের দোকানদারকে জিজ্ঞাসা করলাম ওমুক নাম্বার এর বাসাটা কোন দিকে, দোকানদার বলল, কি ‘স্বপ্ন’ এর ঠিকানা জানতে চাইছেন। অন্যদিন এর তুলনায় আজকে তার চেহারা কিছু্টা ম্লান। অন্যদিন কোন কিছুর দাম ২টাকা কম রাখতে বল্লে মুখের উপর না বলে দিতেন, আজকে দেখলাম মনে হয় কিছুর দাম জিজ্ঞাসা করলেই বলে দেবেন ভাই, আপনি আমাকে প্রতিটি জিনিসের দাম ১০ টাকা কম দিয়েন এখন থেকে। তার দোকান থেকে বের হবার সময় আমাকে খুব যত্ন করে বলল, ভাই আমাদের ভুলে যাবেন না তো!
এরপর গেলাম স্বপ্ন এর নতুন শাখা দেখতে। ঢুকার মুখেই বেশ জটলা। মনে হচ্ছে ৫ টাকা কেজি দরে পোলাউ এর চাল বেচতেছে কেউ ! ভেতরে আর ঢুকা হলা না কারণ প্রচুর লোক আসছে আর কিনতেছে। স্বপ্ন থেকে বের হবার সময় স্বপ্নে প্রবেশ করতে করতে এক কাস্টমার দেখলাম বলতেছে, আজকেই সব কিনে নিয়ে যাবে মনে হচ্ছে !
স্বপ্ন যে বিল্ডিং এ নতুন শাখা খুলেছে আমি তার সামনে থেকে কাচা তরকারি কিনতাম একজনের কাজ থেকে। অনেক দিন ধরে ভ্যানে করে তরকারি বেচত। তার ভালো দিক হচ্ছে, সে দামাদামিতে কিছুটা দাম কম রাখত। সর্বমোট দামের উপর আবার কিছু কম রাখত। আবার বাজার নিয়ে চলে আসার সময় যত্ন করে বলত, স্যার আইসেন, কম রাখার চেস্টা করব যত টুকু পারি। সেই লোকটা আজকে আর সেই জায়গায় নাই। স্বপ্নের সামনে নিশ্চয় ভ্যানে করে কাঁচা তরকারির দোকান দিতে পারবে না।
বাস্তবতা হচ্ছে এক জনের স্বপ্ন অন্যের দুঃস্বপ্নের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আমি অবশ্য কাউকে দোষারোপ করছি না। কোন এলাকায় ব্রীজ হলে সেই এলাকার মাঝিরা পেশা বদল করে !