সেদিন ইস্টার্ন প্লাজার বাম পাশে নতুন গড়ে ওঠা চা দোকানে চা খাচ্ছি আর মার্কেট এর কাস্টমার বের হওয়া ও প্রবেশ দেখছিলাম, সাথে মার্কেটের সামনে চিরস্থায়ী গাড়ী/বাইকের হর্ণ যুক্ত জ্যাম এনজয় করছিলাম। খেয়াল করলাম এক মহিলা চায়ের দোকান থেকে সামান্য দূরে দাঁড়িয়ে ভিক্ষা করছেন। আমাকে খেয়াল করলেও আমার দিকে আসেননি। মার্কেট এর সামনে যাকে পাচ্ছেন তার কাছে হাত পাতছেন। হঠাৎ খেয়াল করলাম এক বিদেশী (চেহারায় বাংলাদেশ এর পাহাড় অঞ্চল কিংবা থাইল্যান্ড/মিয়ানমার এর নাগরিক মনে হচ্ছিল) সাথে এক বাংলাদেশী গাইড বা সঙ্গী।
ভিক্ষুক মহিলা ঐ বিদেশীর কাছে হাত পাতলে সে(বিদেশী) তার সাথে থাকা বাংলাদেশী ব্যক্তিকে ইশারা দিয়ে ঐ মহিলা কি বলে শোনার জন্য ইঙ্গিত দিল। দূর থেকে যা বুঝলাম বাংলাদেশী লোকটা হাতের ইশারা দিয়ে মহিলাকে চলে যেতে বলব !
এবার ভিক্ষুক মহিলা চায়ের দোকানের সামনে(দোকানে পাশে আমি দাঁড়ানো এক মাত্র লাইভ ক্রেতা হিসাবে যে এখনো কাঁচের কাপ থেকে চুক চুক করে চা খাচ্ছে আর সামনের ঘটনা পর্যবেক্ষন করছে ) এসে চায়েক দোকানদার ছোকরাকে বলব, দেখলি, শালা বাঙালী … (বেশ খারাপ গালি) আমাকে ভিক্ষা দিতে দিল না, বিদেশী কিন্তু আমাকে দিতে চাইছিল। … মহিলা আর এক প্রস্থ একই কায়দায় কিছু বলার পর চায়ের দোকানের ছেলেটার দিকে হাত পাতলে ছেলেটা বাঙালীর ইজ্জত বাজাতে দুটাকা তাঁর হাতে দিল। আমার দিকেও মহিলা হাত বাড়িয়ে ভিক্ষার জন্য ইশারা(আবেদন) করল। আমি অভ্যস্থ বাঙালীর মত মাথা ঝাকিয়ে না বোধক উত্তর দিয়ে চায়ের কাপ শেষ করার দিকে মনযোগ দিলাম। মহিলাম অবশ্য আমাকে নিয়ে কোন কটুক্তি না করে ভিক্ষার কাজে মনযোগ দিলেন।
আমার শর্টফিল্মের কাহিনী এই টুকুই। এটা আমি বানাবো ৫ মিনিট এর কাহিনী হিসাবে তবে শর্ট ফিল্মের দৈর্ঘ্য এত ছোট বা ৫ মিনিট হবে না। এটার কাহিনী প্রথমে আমি যা লিখেছি তা দেখানো হবে, এরপর আবার শুরুতে আসবে, এবার কাহিনী দেখানো হবে চাওয়ালা ছোকরার চোখ দিয়ে মানে সে বাড়িয়ে গিয়ে তার কচি বউ বা বাড়ির অন্যদের কাছে ঘটনা কিভাবে বর্ণনা করছে… এভাবে আবার ৫ মিনিট, এরপর ভিক্ষুক মহিলা, সেই হাইব্রিড বিদেশী, সেই বাংলাদেশী/বাঙালী, এবং আশেপাশের অন্য কোণ ব্যক্তিবর্গ যাকে আমি খেয়াল করিনি কিন্তু সে এই ঘটনা খেয়াল করেছে।
যদি শর্ট ফিল্ম বানাতে টাকার ঘাটতি পরে আর আপনাদের কাছে হাত পাতি আপনারা বাঙালীর ইজ্জত রাইখেন কিন্তু !
একটা ব্যাপার খেয়াল করলাম যে, আপনারা বাংলাদেশী আর বাঙালী জাতিয়তা যা নিয়েই লাফ বা ফাল দেন না কেন প্রসংশা বা গালি বা সমালোচনার করার সময় সবাই ‘বাঙালী’ তুলে কথা কয়।