ছোটবেলায় আমি যে প্রাইমারি স্কুলে পড়েছি তার নাম সীতারামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। স্কুলে যাওয়ার জন্য তখন নড়াইল যশোর মেইন রোড থেকে কিছুটা পথ কাঁচা রাস্তা ছিল। তো কাঁচা রাস্তা যা হয় আরকি, সামান্য বৃষ্টিতে যাচ্ছেতা অবস্থা। তার উপর এঁটেলে মাটি। প্রতিদিন স্কুল শেষে স্কুল থেকে ঐ নড়াইল যশোর মেইন রোড পর্যন্ত ঐ কাঁচা রাস্তা দিয়ে হেটে এসে বাসে বা ভ্যানে উঠে বাসায় আসতে হত। আমার বাবা যেহেতু ঐ স্ক্লে শিক্ষকতা করতেন তাই আমি বাবার সাথে বাড়িতে ফিরতাম। স্কুল শেষে বাবাসহ অন্যান্য শিক্ষক এবং শিক্ষিকারাও এক সাথে বের হতেন এবং সবাই পায়ে হেটে । বৃষ্টি হলেই রাস্তায় কাঁদা হত আর খালি পায়ে ছাড়া চলা যেত না। অন্য দিকে কাঁদা রাস্তা পার হতে গুড়ালির উপরে কাঁদা লেগে যেত, মেইন রোডে পৌচ্ছে সবাই আবার রোডের পাশের খাল থেকে পা ধুয়ে নিতেন।
যেহেতু যে কোন দিন বৃষ্টি হতে পারে এবং রাস্তা কাঁদা হবে এবং খালি পায়ে কাঁদা মেখে স্কুল থেকে মেইন রোড পর্যন্ত যেতে হবে তাই আমি চিন্তা করলাম কি করা যেতে পারে। হঠাৎ মাথায় আইডিয়া আসল পলিথিন ব্যাগের। স্কুল ব্যাগের ভেতর সবসময় কিছু পলিথিন ব্যাগ রেখে দিতাম। স্কুল শেষে রাস্তা কাঁদা দেখলেই দুইটা পলিথিন বের করে দুই পায়ে জড়িয়ে স্যান্ডেল হাতে নিয়ে সবার আগে আগে হেঁটে যেতাম, মেইন রোডে পৌচ্ছে ময়লা পলিথিন ফেলে আমি দিব্যি রেডি হয়ে যেতাম বাড়ি যাবার জন্য। দুই একদিন পরে দেখি একজন শিক্ষক এবং দুইজন শিক্ষিতা আমার কৌশল নিজেরাও ফলো করা শুরু করেছে।
আমি যতদূর জানি আমার সেই প্রাইমারি স্কুলে যাবার সেই কাঁচা রাস্তা এখন পাকা বা আধাপাকা হয়েছে এবং রাস্তায় আর কাঁদা হয় না। নিশ্চয় এখন যারা ঐ স্কুলে পড়ছে তারা নতুন কোন সমস্যার খুব সহজ সমাধান নিয়ে ভাবে।