আমি দীর্ঘ দিন, মানে প্রায় সেই ২০০৩ সাল থেকে সময় পেলেই রাস্তায় হাঁটি বিকাল বা সন্ধার মাঝা মাঝি সময়। আগে হাতে থাকতো একটা ল্যাংটা আইসক্রিম যেটা চুক চুক করে খেতাম আর রাস্তায় হাঁটতাম। এখন আইসক্রিম খাই না, মুটিয়ে যাচ্ছি বলে 😛 যাই হোক রাস্তা দিয়ে আপন মনে চলার সময় বেশ কিছু ছোট ছোট আইডিয়া মাথায় আসে যেগুলোকে চাইলে নাটকের গল্পে পরিনত করা যায়। আগের দিন একটা লিখেছিলাম একটা নাটকের কাহিনী পরিকল্পনা করে ফেল্লাম !-একটা কুকুরের কাহিনী!
আজকের গল্প একজন মেসিকে নিয়ে, তিনি একজন ফুটবলার। যা ভাবছেন আসলে তা না, এই মেসি আর্জেন্টিনার তারকা খেলোয়ার মেসি না। এই মেসি একটি ছোট পরিসরের ভেতর তারকা খেলোয়ার, তিনিও ফুটবল খেলেন, তিনিও এই ছোট্ট পরিসরে পরিচিত। এখানে অন্য কুশিলব হলেন একজন গোলপোস্ট, হ্যাঁ আমি ফুটবল মাঠের দুই প্রান্তে যে দুইটা গোলপোস্ট থাকে তাদের একজনের কথা বলছি তবে এই গোলপোস্ট মেসি যেপাশে খেলে তার উল্টোপাশের।
মেসি, মেসি স্বপ্ন দেখে, স্বপ্নের বাস্তবায়নের জন্য যার পরনায় এক রোখা। প্রতিপক্ষের কোন খেলোয়াড়কে সে ভয় পায় না, দৃড় প্রত্যয় নিয়ে বল নিয়ে সে এগিয়ে যেতে চায়। সব বাধা বিপত্তি পেরিয়ে সে গোলপোস্টে বল নিয়ে যেতে চায়।
কোন রকম ঘোষনা বা আয়োজন নয়, খেলা শুরু হলো প্রকৃতির নিয়মে। মেসি বল নিয়ে শুরু করলো তার যাত্রা। প্রতিপক্ষের বাঘা বাঘা খেলোয়াড়কে পরাস্থ করে মেসি বল নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। মাঠও মসৃণ নয়, মেসি মাঝে মাঝে পড়ে যাচ্ছেন আবার উঠে বল নিয়ে ছুটছেন। তার একটাই নেশা গোলপোস্ট এর কাছাকাছি পৌচ্ছানো, এতো আর সাধারণ ফুটবল খেলার অসাধারণ মেসি না, এই মেসিকে বল অপর প্রান্তে টেনে নিয়ে যেতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হবে, করতে হবে একাগ্র চিত্তে পরিশ্রম। মেসি ছুটে চলেছেন, মেসি ছুটছেন বল নিয়ে…
মেসি ছুটে চলেছেন বল নিয়ে সুনিপুন মহিমায়… হায় একি ! মাঠের ওপ্রান্তে গিয়ে মেসি দেখলেন গোল পোস্ট উধাও ! গোলপোস্টের একান্ত সঙ্গী কীপারও নাই, আশে পাশে কয়েকজনকে জিজ্ঞাসা করলেন কেউ জানেই না এখানে গোলপোস্ট ছিলো, কীপার ছিলো, আস্তে আস্তে দর্শকরাও যেন অদৃশ্য হয়ে যেতে লাগলো …! মেসি বিভ্রান্ত হয়ে পড়লেন, ক্লান্ত হলেন, ,দূঃখপ্রাপ্ত হলেন, হলেন গোলপোস্টানুভূতি শুন্য !! গোলপোস্টের উপর প্রচন্ড ক্ষোভ এবং অভিমান নিয়ে মেসি মাটিতে বসে পড়লেন আর নির্বাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন আর মনে মনে চিন্তা করলেন, “শালার গোলপোস্ট যেদিন বাতাস আমার পালের সঙ্গী হবে সেইদিন তোরে আমি দেইখ্যা লমু !”
একজন বিভ্রান্ত মেসি এবং একটি স্বপ্রনোদিত হঠাৎ অদৃশ্য গোলপোস্ট এর গল্প এখানেই শেষ, তবে হয়তো কোন একদিন আবার এখান থেকেই নতুন গল্পের শুরু হবে আর মেসির গল্প এগিয়ে যাবে, আপাতত আমি এখন আবার পেটের ধান্দায় কাজ করতে বসবো।
ধন্যবাদ,
স্থানঃ নড়াইল, নিজের বাড়ির নিজের চেয়ার
নিজের পুরাতন লেখা নিজেই আবার পড়লাম। এতে একটা উপলব্ধি করা যায় যে যখন লিখেছিলাম তখন কি ধরনের চিন্তা থেকে লিখেছিলাম বা তখন ভাবনার জগতে কি খেলছিল।.
কী ব্যাপার ! নড়াইলে যে গোলপোস্টটার খোঁজে গিয়েছেন, সেটার খোঁজ পেয়েছেন তো ? স্বাপ্নিক খেলোয়ার আছে, স্বপ্ন সাধনের বল আছে, কিন্তু স্বপ্নকে রূপ দেয়ার গোলপোস্ট না-থাকাটা তো দুঃস্বপ্নই হবে !
আমরা স্বপ্নকে হাতের মুঠোয় দেখতে চাই। শুভকামনা সবসময়…
সুন্দর 🙂