in Uncategorized

পায়খানা – দ্য টয়লেট !

একজনের ছেলের বিয়ের কথা চলতেছিল। মেয়ে বাড়ির লোক ছেলে বাড়িতে বিয়ে ঠিক করতে আসলে ছেলের বাড়ির লোক বলেছিল যে আমার ছেলে ঢাকায় থাকে, পায়খানা কত্তি বাড়ির বাইরে যাতি হয় না। পায়খানা ঘরের ভেতর! আসলে গ্রাম থেকে শহরায়নের বা মানুষের জীবনমানের উন্নতির ধাপে মানুষ বাগান থেকে বাড়ির সীমানার ভেতর অদূরে টয়লেট এবং এরপর পাকা বাড়ি বানালে ঘরের ভেতরেই টয়লেট বানিয়েছে বা অভ্যস্থ হয়েছে।

আমাদের ছোট বেলায় টয়লেট ছিল ঘরের বাইরে বাড়ির সীমানার অদূরে। আমাদের বাড়ি রাস্তার পাশে , রাস্তার পাশে ছিল ক্যানাল বা খাল টাইপ যা দিয়ে বর্ষার পানি বয়ে বিলে চলে যেত। রাস্তা, খাল এরপর আমাদের বাড়ি। টয়লেটটা ছিল সেই ক্যানাল বা খালের পাশে। বর্ষাকালে অনেক সময় এত বেশি পানি হত যে প্রায় আমাদের বাড়ির উচ্চতার কাছাকাছি চলে আসত। টয়লেটের মল যে গর্তে জমে তাতে পানি ঢুকে এমন অবস্থা হত যে টয়লেটে ঢুকলে দেখা যেত মল ভেসে আছে, কারণ মল যেখানে গিয়ে জমা হবে সেখানটা খালের পানির লেভেলে চলে আসছে। এই অস্বস্থিকর পরিবেশ দুই তিন দিন থেকে সপ্তাহ খানেক হয়ে যেত মাঝে মাঝে। এরপর পানি কমে গেলেই আবার আগের মত স্বাভাবিক হয়ে যেত। মানুষের জীবন হচ্ছে আমাদের সেই পুরাতন টয়লেটের মত। একটু চিন্তা করে হিসাব করলে আমাদের এই টয়লেটের সাথে আপনার জীবনের মিল খুঁজে পাবেন।

আমার বিয়ের আগেই সেই টয়লেট পরিত্যাক্ত হয়ে ঘরের ভেতরে পায়খানা করার ব্যবস্থা হয়েছিল। এরপর থেকে আমরা ঘরের ভেতরেই হাগি !

সময়ের পরিক্রমায় সেই রাস্তার পাশের খাল মাটি দিয়ে ভরাট করতে করতে খালই নাই। পানিও জমে না। এখন আসলে আমাদের বাড়ির আশেপাশের কোথাও সেই খালের অস্তিত্ব নাই। আমাদের সেই পুরাতন টয়লেট বাড়ির অদূরে এখনো ঠাই দাঁড়িয়ে আছে। টয়লেট এর ইতিহাসে এখনো সেই বর্ষাকালের দুই তিন দিনের দূর্বিসহ স্মৃতি জমে আছে। কোন একদিন টয়লেটটি ভেঙে ফেলা হবে, আমাদের ঘরের বাইরে হাগার স্মৃতিও হারিয়ে যাবে !